হাতে-টানা রিকশা: হারিয়ে যাওয়া এক ঐতিহ্যবাহী বাহন

Image source: Kindle Magazine

হাতে-টানা রিকশার সূচনা হয়েছিল ১৮৮০ সালের দিকে। প্রথমে জাপান এবং চীন থেকে আসা এই বাহন ধীরে ধীরে বাংলায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। হাতে-টানা রিকশা মূলত কাঠ এবং লোহার ফ্রেম দিয়ে তৈরি হতো, যার সামনে লাগানো থাকত দুটি বড় চাকা। পিছনে ছিল বসার জন্য একটি আরামদায়ক আসন। রিকশাচালক একজন মানুষ, যিনি সামনে দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে রিকশা টেনে নিয়ে যেতেন। কলকাতা, ঢাকা, এবং চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে এই রিকশার ব্যাপক প্রচলন ছিল।

এই রিকশা ছিল বিশেষত মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের চলাচলের মাধ্যম। একসময় হাতে-টানা রিকশা ছিল যাতায়াতের অন্যতম প্রধান উপায়। হাত দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া এই বাহনটি শহরের বিভিন্ন সরু রাস্তায় চলাচল করার জন্য আদর্শ ছিল। এতে করে ছোট্ট পায়ে হেঁটে যাতায়াতের চেয়ে অনেক দ্রুত এবং আরামদায়কভাবে গন্তব্যে পৌঁছানো যেত।
কলকাতার রাস্তায় কিছু হাতে-টানা রিকশা এখনো দেখা যায়, বিশেষ করে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এবং শহরের কিছু পুরনো অঞ্চলে। তবে এই রিকশাগুলো এখন আর সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য ব্যবহার হয় না; বরং কিছু বিলাসী এবং ঐতিহ্যপ্রেমী মানুষের শখের যানে পরিণত হয়েছে।

ঢাকায় হাতে-টানা রিকশার চলাচল প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। পুরনো ঢাকার কিছু জায়গায় শখ করে হাতে-টানা রিকশা চালানোর জন্য কয়েকজন রিকশাচালক এখনও রয়েছেন, তবে তাদের সংখ্যা একেবারে নগণ্য। সিদ্দিক বাজারের ঘোড়া পট্টি এবং বঙ্গবাজারের পশ্চিম রাস্তায় হাতে-টানা রিকশার দেখা মেলে, কিন্তু সেগুলোও কেবলমাত্র বিশেষ দিনে, পূজা-পার্বণে ব্যবহার হয়।

Share with others

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *