
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, যিনি ২০২১ থেকে ২০২৪ সালে তার দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর পর্যন্ত ইরানের রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন যিনি ইরানের রাজনীতিতে একজন বিতর্কিত এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। রাইসির জন্ম ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৬০ সালে ইরানের মাশহাদে শহরে।তিনি গত কয়েক দশকে ইরানের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাথে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন।
প্রারম্ভিক জীবন এবং শিক্ষা
রাইসি বড় হয়েছিলেন মাশহাদে, ইরানের একটি প্রধান ধর্মীয় শহর যেটা অষ্টম শিয়া ইমাম আলী আল-রিদা-এর সমাধিস্থল হিসাবে পরিচিত। তার প্রাথমিক জীবন ভূমি সংস্কার যুগ (১৯৬০-৬৩) এবং শ্বেত বিপ্লব (১৯৬৩-৭৯), শাহের শাসনামলে ইরানে উল্লেখযোগ্য আধুনিকীকরণ এবং নগরায়নের সময়কালের সাথে মিলে যায়।
১৯৭৫ সালে, রাইসি শিয়া ইসলামের বুদ্ধিবৃত্তিক কেন্দ্র কওমের একটি সেমিনারিতে যোগদান করেন, যেখানে তিনি উল্লেখযোগ্য আলেমদের অধীনে অধ্যয়ন করেন এবং রুহুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্বে বিপ্লবী আন্দোলনে জড়িত হন।
বিচার ব্যবস্থায় উত্থান
১৯৭৯ সালের ইরানী বিপ্লবের পর, রাইসি নতুন ইসলামী প্রজাতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য নিবেদিত একটি কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি দ্রুত বিচার ব্যবস্থার মধ্যে পদে আরোহণ করেন, বিভিন্ন অঞ্চলে একজন প্রসিকিউটর হিসাবে শুরু করে এবং অবশেষে ১৯৮৫ সালের মধ্যে তেহরানে ডেপুটি প্রসিকিউটর হয়ে ওঠেন। ১৯৮৮ সালে ইরানে হাজার হাজার রাজনৈতিক বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কমিটির একজন সদস্য থাকার জন্য তিনি তেহরানের “কসাই” নামেও অনেকর কাছে পরিচিত ।
রাজনৈতিক আরোহন এবং রাষ্ট্রপতি
২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি, হাসান রুহানির কাছে হেরে গেলেও 38% ভোট পেয়েছিলেন। ২০১৯ সালে বিচার বিভাগের প্রধান হিসাবে তার নিয়োগ তার প্রভাবকে আরও দৃঢ় করেছে। ২০২১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে, রাইস নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে জয়ী হন, যদিও ভোটারদের উপস্থিতি ৫০% এর নিচে ছিল।
আকস্মিক মৃত্যু
১৯ মে, ২০২৪ সালে ইরানের উজির কাছে একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় তার মৃত্যুর মাধ্যমে ইব্রাহিম রাইসির শাসনকাল আকস্মিকভাবে শেষ হয়। আজারবাইজানের সাথে পার্বত্য সীমান্ত অঞ্চলে খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। তাৎক্ষণিক খোঁজাখুঁজি ও উদ্ধার তৎপরতা সত্ত্বেও কাউকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়নি।