
ডোজকয়েন (Dogecoin) নামটি শুনলেই হয়তো অনেকের চোখের সামনে সেই বিখ্যাত শিবা ইনু কুকুরের ছবি ভেসে ওঠে। প্রথম দিকে মজার ছলে তৈরি হওয়া একটি মিম কয়েন থেকে আজ বিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হওয়ার পেছনে রয়েছে কিছু অবিশ্বাস্য গল্প এবং স্ট্র্যাটেজি।
ডোজকয়েনের সূচনা
ডোজকয়েনের জন্ম হয় ২০১৩ সালে, যখন IBM এর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বিলি মার্কাস এবং অ্যাডোবির মার্কেটিং ম্যানেজার জ্যাকসন পামার মিলে এই মুদ্রাটি তৈরি করেন। তারা চেয়েছিলেন একটি মজাদার ও সহজবোধ্য ক্রিপ্টোকারেন্সি তৈরি করতে যা বিটকয়েনের মতো গুরুতর এবং জটিল না হয়। শুরুর দিকে, ডোজকয়েনকে কেউই গুরুত্ব দেয়নি; বরং এটি ছিল ইন্টারনেট কমিউনিটির মধ্যে মজা করার একটি মাধ্যম।
ডোজকয়েনের লোগোতে ব্যবহৃত শিবা ইনু কুকুরের ছবি এবং এর সাথে থাকা মজাদার লেখাগুলি (যা মিম হিসেবে পরিচিত) ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। মিম কালচারের সঙ্গে এই কয়েনের গভীর সংযোগ থাকায়, ডোজকয়েন দ্রুতই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মন জয় করে নেয়। ইন্টারনেটের মজাদার মিম কমিউনিটিতে এটি জনপ্রিয়তা লাভ করে, এবং এর ভক্তরা বেশিরভাগ সময় এটি নিয়ে মজা করতে থাকেন।
ডোজকয়েনের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো এর কমিউনিটি। শুরুর থেকেই ডোজকয়েন কমিউনিটি বিভিন্ন ধরনের দাতব্য কার্যক্রমে জড়িত ছিল। ২০১৪ সালে, তারা জামাইকার ববস্লেড দলকে শীতকালীন অলিম্পিকে অংশগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করে দেয়। এছাড়াও, তারা NASCAR ড্রাইভার জশ ওয়াইজকে স্পন্সর করে এবং বিভিন্ন দাতব্য উদ্যোগে নিয়োজিত থাকে। এই ধরনের কাজগুলো ডোজকয়েনের কমিউনিটিকে একটি শক্তিশালী এবং সংহত দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
ইলন মাস্ক এবং ডোজকয়েনের উত্থান
ইলন মাস্ক, টেসলা এবং স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা, প্রায়ই তার টুইটার অ্যাকাউন্টে ডোজকয়েন নিয়ে মজা করে টুইট করতেন। তার এই টুইটগুলো ডোজকয়েনের বাজার মূল্যকে দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। ইলন মাস্কের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তির সমর্থন এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্রভাবের কারণে ডোজকয়েনের জনপ্রিয়তা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং এটি ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটে বড় এক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়।
ডোজকয়েনের মূলধারায় প্রবেশের পেছনে অন্যতম কারণ ছিল এর অপ্রত্যাশিত জনপ্রিয়তা এবং কমিউনিটির অব্যাহত সমর্থন। প্রাথমিকভাবে মজার জন্য তৈরি হওয়া এই কয়েনটি এখন একটি প্রকৃত বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়। বড় বড় বিনিয়োগকারী এবং প্রতিষ্ঠানগুলিও ডোজকয়েনের প্রতি আগ্রহী হতে শুরু করে, যা এর বাজার মূল্যকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
ডোজকয়েনের মূল্য হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া এবং কমে যাওয়া উভয়ই বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কতার বার্তা বহন করে। ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার অত্যন্ত অস্থির এবং বিনিয়োগ করার আগে ভালভাবে গবেষণা করা প্রয়োজন।
তথ্যগত কোনো ভুল বা অভিযোগ জানাতে মেইল করুন thereversetimer@gmail.com