ছাগলনাইয়া উপজিলার নামকরণ নিয়ে নানান ধরনের আশ্চর্য গল্প শুনা যায় যেমন গান্ধীর ছাগল চুরির ঘটনা। ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দ অবিভক্ত ভারতের নোয়াখালী জুড়ে শুরু হয় ভয়ঙ্কর হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা। এরই পরিপেক্ষিতে ৭ নভেম্বর ১৯৪৬-এ তিনি নোয়াখালীর চৌমুহনী রেলস্টেশনে এসে পৌঁছেন। তিনি ছাগলের দুধ পান করতেন বলে সঙ্গে করে নিজের ছাগলটিও নিয়ে আসেন । কিন্তু নোয়াখালীতে আসার পর আকস্মিকভাবে তাঁর ছাগল চুরি হয়ে যায়। কেউ কেউ মহাত্মা গান্ধীর এই ছাগল চুরির ঘটনা থেকেই ছাগলনাইয়া নামের উৎপত্ত বলে মনে করে থাকেন।
কিন্তু উপজেলাটির নামের প্রকৃত ইতিহাস ভিন্ন।স্থানীয়দের মতে, ছাগলনাইয়ার আদি নাম ছিল সাগর নাইয়া। কাজীরবাগের উচ্চভূমি থেকে পূর্বদিকে পার্বত্য ভূমির মধ্যভাগে ছিল এক সময় এক বিরাট সাগর। কেউ কেউ ওটাকে ‘সুখ সাগর’ নামে অভিহিত করেন। কেউ কেউ আবার এ সাগরকে ‘বিল্লাহ সাগর’ বলে থাকেন। এই সাগর পারাপারের জন্য ছিল নাইয়া বা নৌকার মাঝি। সাগর ও নাইয়া শব্দ দুটি যুক্ত হয়ে ‘সাগর নাইয়া’ নামের উদ্ভব। ইংরেজ আমলের শুরুতে সাগর শব্দটি ভুলক্রমে ‘সাগল’ নামে লিপিবদ্ধ হয়েছিল। এভাবেই কালের বিবর্তনে ছাগলনাইয়া শব্দে পরিণত হয়েছে বলে প্রচলিত।
সুতরাং গান্ধীর ছাগল চুরির ঘটনার সঙ্গে এই অঞ্চলের নামকরণের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মহাত্মা গান্ধী নোয়াখালী এসেছিলেন ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে, আর ছাগলনাইয়া নামকরণ হয়েছে ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গৃহীত ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় একমাত্র বাঙালি মুসলিম শিক্ষার্থী হিসেবে ফার্স্ট ডিভিশন অর্জনকারী এ উপজেলার সন্তান, মাস্টার ওয়াহিদুর রহমান ভূঁইয়ার ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের একটি প্রত্যয়নপত্রে ‘ছাগল নাইয়া’ (পৃথকভাবে) লিখিত রয়েছে। তথ্যসূত্রঃ ডেইলি ইত্তেফাক
#history #cagolnaiya #naming