গাজীপুর জিলার ইতিহাস নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে । অনেক ইতিহাসবিদদের মতে, গাজীবংশের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ভাওয়াল গাজীর নামানুসারে দ্বাদশ শতাব্দীর শেষ বা ত্রয়োদশ শতাব্দীর দিকে ভাওয়াল নামের উৎপত্তি এবং এই ভাওয়াল নামের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৫৯৫ সালে মুঘল সম্রাট আকবরের দরবার থেকে প্রকাশিত ঐতিহাসিক আবুল ফজল রচিত আইন-ই-আকবরী গ্রন্থে। মধ্যযুুগে বাংলার প্রাচীন জনপদগুলোর মধ্যে ভাওয়াল পরগণা ছিল প্রসিদ্ধ। উপ-মহাদেশে মুঘল শাসনামলে কিছু সময়ের জন্য ভাওয়াল ছিল একটি স্বাধীণ পরগণা। গাজীবংশের শাসকরাই ছিলেন ক্ষণকালেন স্বাধীন বাংলার অমন স্থাপতি। পরে স¤্রাট আকবর বাহুবলে ভাওয়ালকে তার বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল জেলা গঠনের প্রস্ততি হিসেবে রাজনৈতিক দলের নামের আগে ভাওয়াল গড় জেলার নাম ব্যবহার করতে শুরু করে। ১৯৭৮ সালে মহকুমা বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ভাওয়াল গড় মহকুমা বাস্তবায়নের দাবি উপত্থাপিত হয়। ১৯৭৮ সালে ১৮ ডিসেম্বরে জয়দেবপুরের রথখোলায় তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আব্দুস সাত্তার রাষ্ট্রপতর পক্ষে মহকুমার উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। ভাওয়াল রাজ প্রতিষ্ঠিত দাতব্য চিকিৎসালয়ে প্রথমিকভাবে মহকুমার কার্যালয় স্থাপিত হয়। পরবর্তিতে এটি পৌরসভার কায়ালয় হিসেবে ব্যবহার হত। বর্তমানে এটি শ্বশান ঘাট নামে পরিচিত। পরবর্তীকালে সদর এমপি মরহুম হাবিবুল্লার অক্লান্ত পরিশ্রমে ভাওয়াল রাজবাড়িতে মহকুমা কার্যালয় স্থানান্তরিত হয়। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে মহকুমার নাম ভাওয়াল গড়ের পরিবর্তে ভাওয়ালের গাজীদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ মহকুমার নাম বাদ দিয়ে গাজীপুর নামকরণ করা হয়।